শীতে শক্তি বাড়ায় এমন ১০টি খাবার - সারাদিন সতেজ থাকার উপায়
প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরেও শীতের প্রভাব অনেক বেশি। সুতরাং শীতে আমাদের শরীরে অনেক সময় কোন পুষ্টির অভাবের ঘাটতি হয় আমরা টের পায় না সুতরাং আমাদের শরীরের পুষ্টি ঠিক রাখতে শীতে যে সকল খাবার গুলো খাওয়া জরুরী।
শীতের শক্তি বাড়ায় এমন দশটি খাবারের কথা আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। সুতরাং শীতে যেন আপনি দুর্বল না হয়ে পড়েন শক্তি যেন আপনার বেড়ে থাকে এজন্য দশটি খাবারের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো
শীতে শক্তি বাড়ায় এমন ১০টি খাবার: সারাদিন সতেজ থাকার উপায়
শীতকালে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আমাদের শরীর কিছুটা ক্লান্ত এবং অলস বোধ করতে পারে। সূর্যের আলো কম থাকায় এবং ঠাণ্ডার কারণে শরীরের এনার্জি লেভেল (energy level) কমে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। এই সময়ে শরীরকে উষ্ণ রাখা এবং কর্মশক্তি বজায় রাখার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
সাধারণ ফাস্টফুড বা অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার না খেয়ে যদি কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টিকর খাবার খাদ্যতালিকায় যোগ করা যায়, তবে সহজেই শীতের ক্লান্তি দূর করা সম্ভব। এখানে এমন ১০টি খাবার নিয়ে আলোচনা করা হলো যা শীতে আপনার শক্তি বাড়াতে দারুণ কার্যকর:
১. ওটস বা ওটমিল
ওটস হলো জটিল কার্বোহাইড্রেটের (complex carbohydrates) একটি চমৎকার উৎস। এটি ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রেখে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে। শীতের সকালে এক বাটি গরম ওটমিল আপনাকে সারাদিনের কাজের শক্তি যোগাবে।
২. বাদাম এবং বীজ (Nuts and Seeds)
বাদাম, যেমন – কাঠবাদাম, আখরোট এবং বিভিন্ন বীজ (যেমন তিসির বীজ, কুমড়োর বীজ) স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবারে ভরপুর। এগুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে এবং তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়। প্রতিদিন একমুঠো মিশ্র বাদাম খেতে পারেন।
৩. খেজুর
খেজুর হলো প্রাকৃতিক চিনির একটি দারুণ উৎস। এতে থাকা ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ এবং গ্লুকোজ দ্রুত শরীরে শক্তি জোগায়। এছাড়াও খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং পটাশিয়াম থাকে, যা শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখতে এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
৪. মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এ এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। সাধারণ আলুর চেয়ে এটি স্বাস্থ্যকর এবং এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Glycemic Index) কম হওয়ায় এটি দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি দেয়। এটি সেদ্ধ বা পুড়িয়ে স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন।
৫. ডিম
ডিমকে প্রায়শই "নিখুঁত খাবার" বলা হয়। এতে উচ্চ মানের প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। ডিম পেশী গঠনে সাহায্য করে এবং শরীরের শক্তি সরবরাহ নিশ্চিত করে। শীতের নাস্তায় একটি ডিম দারুণ কার্যকর।
৬. পালং শাক এবং অন্যান্য সবুজ শাকসবজি
শীতকালে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি পাওয়া যায়। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে ক্যালোরিকে শক্তিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করে।
৭. মৌসুমী ফল (লেবু, কমলা)
শীতকালে ভিটামিন সি যুক্ত ফল, যেমন কমলা, মাল্টা বা লেবু প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
৮. ডার্ক চকলেট
হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন! ডার্ক চকলেটে থাকা ক্যাফেইন এবং থিওব্রোমিন (theobromine) মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং তাৎক্ষণিক শক্তি ও ভালো অনুভূতি তৈরি করে। তবে দুধ চকলেট নয়, অন্তত ৭০% কোকোয়া আছে এমন ডার্ক চকলেট বেছে নিন।
৯. মাছ (বিশেষত তৈলাক্ত মাছ)
স্যামন বা টুনা মাছের মতো তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং শীতের বিষণ্ণতা দূর করে শক্তি বাড়ায়।
১০. আদা এবং মশলাযুক্ত চা
শীতকালে আদা দেওয়া গরম চা শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় এবং সতেজ অনুভূতি দেয়। আদা হজমে সাহায্য করে এবং শীতকালীন ঠাণ্ডা জনিত ক্লান্তি দূর করতে কার্যকর।
উপসংহার
শীতকালে আলস্যকে জয় করতে ওষুধ নয়, বরং পুষ্টিকর খাবারকেই ভরসা করুন। উপরের ১০টি খাবার আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পার্থক্য নিজেই অনুভব করুন। একটি সুষম খাদ্যতালিকা এবং পর্যাপ্ত জল পান নিশ্চিত করলেই এই শীতেও আপনি থাকবেন প্রাণবন্ত ও কর্মচঞ্চল!

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url